শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন
তুফান চাকমা, নানিয়ারচর উপজেলা প্রতিনিধিঃ- মহান বিজয় দিবসে রাঙামাটির নানিয়ারচরে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ এর সমাধিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে বুড়িঘাটে অবস্থিত শহীদ মিনারে
পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন, রাঙ্গামাটির উপমহাপরিদর্শক মো: মোজাম্মেল হোসেন, শ্রম পরিদর্শক বিজ্ঞান জ্যোতি চাকমা, মোঃ জহিরুল ইসলাম এবং পরাগ দাশ প্রমুখ।
এসময় উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি- ৩ পার্বত্য জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো: মোজাম্মেল হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে শাহাদাতবরণকারী সকল শহীদ এবং বীরশ্রেষ্ঠগণের আত্মোৎসর্গের মাধ্যমে আমরা যে একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি- এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমাদের সকলের। সেজন্য আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা এবং পরবর্তী প্রজন্মেও মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়া।
উল্লেখ্য, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রত্যুষে জেলা প্রশাসনের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১-এর ১৯ এপ্রিল বিকালে লে. খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে সেনা, ইপিআর, পুলিশ-সহ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল নানিয়ারচর বাজারে আসেন। পরের দিন ২০ এপ্রিল সকালে রণসাজে মুক্তিযোদ্ধাগণ বোটে আর লঞ্চে করে বুড়িঘাটের দিকে রওনা হন। সেখানে হ্রদের দিকে আসতে তিনটি টিলা। রাঙ্গামাটির দিক থেকে আসতে প্রথম টিলায় ৯-১০ জন যোদ্ধাসহ মুন্সী আব্দুর রউফ, বাকী দুটি টিলায় অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাগণ অবস্থান নেন। শত্রুপক্ষের ২য় কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের একটি কোম্পানি ৬টি ৩ইঞ্চি মর্টার নিয়ে ৩টি লঞ্চ ও ২টি স্পিটবোটে করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরক্ষা এলাকার মধ্যে ঢুকে পড়ে। শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র-গোলাবারুদ ফুরিয়ে আসলে কমান্ডার সেনাদের পশ্চাদপসরণের নির্দেশ দেন। মুন্সী আব্দুর রউফ হালকা মেশিনগান হাতে অসীম সাহসের সাথে শত্রুদের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের পশ্চাদপসরণ সহজ ও নিরাপদ হয়। তুমুল যুদ্ধের এক পর্যায়ে শত্রুদের মর্টারের গোলা এসে মুন্সী আব্দুর রউফ এর অবস্থানের উপর পড়ে। মুহুর্তে তার দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে চতুর্দিতে ছড়িয়ে পড়ে। শহীদ হন দেশমাতৃকার অকূতোভয় সন্তান মুন্সী আব্দুর রউফ।